বারান্দায় বসেছিলাম । হঠাৎ আম্মু এসে বললেন,"কাব্য আমি একটু ছাদে যাচ্ছি গোসল করে নে |" বলে তিনি চলে গেলেন | আম্মুর শাড়ির লাল রংটা দেখে নিসার কথা মনে পরে গেল | ওকেও লাল একটা শাড়ি দিয়েছিলাম সেকেন্ড ইয়ারে থাকতে । কথাটা মনে পড়তেই মনটা খারাপ হয়ে গেল | ওর কথা অনেক মনে পরে | ওকে অনেক ভালবাসতাম | আসলে এখন ও বাসি কিনা জানি না | আমার সরলতায় মুগ্ধ হয়েই হয়ত সে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে | একটি বছর হয়ে গেছে ওর সাথে দেখা হয় না | মনে হতে থাকলো এক অন্ধকারের মধ্য তলিয়ে যাচ্ছি | সব পুরনো ঘটনা স্মৃতি হয়ে মগজে আসতে লাগলো |
" ক্লাস এইট থেকে আমি আর নিসা একসাথে পড়ি | কিন্তূ কোনদিন কোনো কথা হয়নি | ক্লাস নাইনৈ উঠার পর আম্মু একদিন ওদের বাসায় নিয়ে গেলেন | নিসার আম্মু নাকি আম্মুর ছোটবেলার বান্ধবী | ঐদিনই ওর সাথে প্রথম কথা হয় | তখন থেকেই আমাদের বন্ধুত্ব | দুজনই একজন আরেকজন কে প্রতিটা কাজে সাহায্য করতাম , প্রতি টা কথা শেয়ার করতাম | ও আমাকে কোনো কাজ করে দিতে বললে যেভাবেই হোক করে দিতাম | খুব তাড়াতাড়ি আমাদের বন্ধুত্ব গভীর হয়ে গেল | এক সময় বন্ধুত্ব ভালবাসায় পরিণত হয়ে গেল অজান্তেই | ক্লাস টেনৈ ওঠার পর আমি ওকে প্রপোস করি | এভাবেই আমাদের মাঝে ভালবাসার সম্পর্র্কের উদ্ভব হয় | আমি আম্মুকে আগেই সব খুলে বলেছিলাম | আম্মু মেনে নেয়,কিন্তু আব্বুকে সব বলে দেয় | আব্বু ব্যাপারটাকে খুব অপছন্দ করলেও আম্মু আব্বুকে মানিয়ে নেয় | তখন থেকে আমরা শুধু ফোনে কথা বলতাম | এভাবেই কাটে দু বছর | মাঝখানে এস.এস.সি পরীক্ষায় দুজনই জি.পি.এ ৫ পাই | আমাদের সম্পর্ক আরো গভীর হয়ে ওঠে | ওকে বিশ্বাস করতাম নিজের চেও বেশি | ও যা বলত তাই করতাম | কলেজ ভর্তি হবার পর সেকন্ড ইয়ারৈ রাতে ওর ফোন প্রায়ই ওয়েটিং আসত | কিন্তূ কখনো সন্দেহ করি নাই , অবিশ্বাস করি নাই | ও যা বলত বিশ্বাস করতাম | ও নানা কারণে আমার সাথে ঝগড়া করতে চেষ্টা করত | আমি সবসময় মাফ চেয়ে সব ঠিক করতাম | এভাবে আরো দুটা বছর কেটে যায় | আম্মু নিসার আম্মুকে সব জানালে , তিনি মেনে নেন | কিন্তূ ওর আব্বুকে কিছু জানানো হয় নাই ,কারণ তিনি খুব রাগী ছিলেন |
একদিন কোথা থেকে নিসার আব্বুও জানতে পারলেন আমাদের সম্পর্কের কথা | তিনি সম্পর্কটি মেনে নেন নাই | প্রায় ছয় মাস আমাদের কোনো যোগাযোগ হয় নাই | কথা হয় নাই , দেখা হয় নাই | নিসার আম্মু অনেক বুঝানোর পর ছয় মাস পর একদিন তিনি আন্টিকে নিয়ে আমাদের বাসায় হাজির | তিনি আমাদের পানচিনি করিয়ে দিতে চেলেন |আব্বু ,আম্মু ও সমর্থ হলে আমাদের পানচিনির তারিখ ঠিক হয়ে গেল | ঐদিন ওর সাথে আমার কথা হয় নি | পরের দিন নিসা ও ওর আম্মু বাসায় আসে | ও আমাকে বিয়ে করার জন্য রাজি হয় নাই | ও নাকি আমাকে ভালবাসে না ,অন্য এক ছেলেকে ভালবাসে | সেই ছেলে নাকি অনেক বড়লোক , ওকে অনেক খুশী রাখবে , ও যা চায় সব দেয় | এসব ও নিজের মুখে খুব মজা করে বলেছিল | আমি সেই মুহুর্তে কোনো কথা বলতে পারি নাই | শুধু একবার ওর আম্মুর মুখের দিকে তাকাই , তিনি মাথা নিচু করে বসে ছিলেন |
আমি কি বোকা ? গাধা ? গবেট ? আমার সরলতা স্বভাবটা কি খুব খারাপ ?"
হঠাত শব্দ সুনতে পেলাম , আম্মু বললেন , "কাব্য এখনো গোসল করতে যাস নাই ? " আমি ছুটে গিয়ে আম্মুকে জড়িয়ে ধরলাম | জিজ্জেস করলাম , "আম্মু আমি কি খুব বোকা ? "আম্মু জড়িয়ে ধরে বলল , "কি হয়েছে তোর ? এমন কথা বলছিস কেন ? আবার জিজ্জেস করলাম , "আমি কি গাধা ? " -" মোটেও না , তুই দুনিয়ার সবচেয়ে ভালো ছেলে | তোর মত ছেলে পেয়ে আমরা গর্বিত |
আম্মুর কথা শুনে মনে হলো আবার সব পেয়ে গেছি | যদি সৎ হওয়া ,সত্য ভালবাসা বোকামি তাইলে আমি বোকাই , যদি সরলভাবে জীবনযাপন করা গাধামি , আমি গাধাই |
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
জিনিয়া
আমার তো মনে হয় নিসা ঠিক কাজটি করেছে..ও ভালবাসে না সেটা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে বিয়ের আগেই..সততার পুরুস্কার তো তাকেও দেয়া যেতে পারে. ..সাদামাটা গল্প...সামনে আরো ভালো গল্পের প্রত্যাশা করছি..শুভকামনা..
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।